২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ২১ বছর: ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় জাতি, আপিল বিভাগে চলছে শুনানি

প্রতিবেদন

ঢাকা, ২১ আগস্ট
আজ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ভয়াবহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ২১তম বার্ষিকী। ২০০৪ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগের তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে চালানো হয় নৃশংস এই হামলা। মুহূর্তের মধ্যে গ্রেনেড বিস্ফোরণে নিহত হন ২৪ জন, আহত হন শতাধিক নেতা-কর্মী। প্রাণ হারান আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা আইভি রহমানসহ অনেকে।

ঘটনার পরপরই মতিঝিল থানায় মামলা হয়। তবে তদন্ত নিয়ে শুরু থেকেই তৈরি হয় বিতর্ক। ২০০৭ সালে এক-এগারোর সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সিআইডি নতুন করে তদন্ত শুরু করে। ২০০৮ সালে প্রথম অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মামলার অধিকতর তদন্তে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আরও ৩০ জনকে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয়।

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ আলোচিত এ মামলার রায় দেয়। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং আরও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদের সাজা ঘোষণা করা হয়।

কিন্তু ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ঐ রায় বাতিল করে সবাইকে খালাস দেন। পূর্ণাঙ্গ রায়ে আদালত পর্যবেক্ষণ করে বলেন, দেশের ইতিহাসে এটি এক “জঘন্য মর্মান্তিক” ঘটনা হলেও মামলার তদন্ত ছিল “অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ।” সুষ্ঠু ও স্বাধীনভাবে নতুন করে তদন্তের সুপারিশ করে মামলাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। চলতি বছরের ১৭ জুলাই থেকে আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এখন পর্যন্ত চার দিন শুনানি হয়েছে। গতকালও শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার নতুন দিন ধার্য রয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্যাহ আল মাহমুদ। আসামিপক্ষে রয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, মোহাম্মদ শিশির মনির ও মোহিনুর রহমান।

জাতির প্রত্যাশা—২১ আগস্টের মতো একটি ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের বিচার শেষ পর্যন্ত সঠিক ও সর্বোচ্চ ন্যায়বিচারের মাধ্যমে সম্পন্ন হোক।